পালসার মোটরসাইকেলসহ ৫০টি আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে এ ঘোষণা দিয়েছেন দলের বাগমারা উপজেলা শাখার সভাপতি সংসদ সদস্য এনামুল হক। আগামী ২২ নভেম্বর এ কর্মসূচির উদ্বোধন হওয়ার কথা। প্রচার করা হচ্ছে, এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘এ রকম ঘোষণা থাকায় আমি ওই অনুষ্ঠানে যাচ্ছি না। কেন্দ্র থেকে কেউই সেখানে যাবেন না। সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানটিও স্থগিত করা হয়েছে।’
তবে এ পুরস্কারের আয়োজন নিয়ে প্রতিদিনই মাইকিং অব্যাহত রয়েছে। পুরস্কারের আয়োজন-সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার ও তোরণে এরই মধ্যে ছেয়ে গেছে গোটা উপজেলা। এসব প্রচার উপকরণে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ছবির সঙ্গে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পুরস্কারের ছবিও রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দলের বাগমারা উপজেলা শাখার সভাপতি ও সংসদ সদস্য এনামুল হক বলেন, ‘আগ্রহ সৃষ্টির জন্য এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। যারা দূর-দূরান্ত থেকে আসবেন এবং বেশি সদস্য সংগ্রহ করে দেবেন, শুধু তাদের জন্যই এ উদ্যোগ।’
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার আবুল বলেন, ‘সদস্য সংগ্রহের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ২০ টাকা করে কুপন বিক্রির লাভের টাকায় আলাদা র্যাফেল ড্র করা হবে। আয়োজনকে কালারফুল করতে এটা করা হয়েছে।’
এ কার্যক্রম নিয়ে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ত্যাগী নেতাকর্মীরা এ উদ্যোগের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী শক্তিশালী সংগঠন। এটি এমন দল নয় যে, পুরস্কার দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। এ উদ্যোগ সংগঠনের আদর্শ ও শিষ্টাচারবিরোধী। এতে সুবিধাভোগী বিএনপি-জামায়াত-শিবিরপন্থিদেরও সদস্যপদ পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় শাখার উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘১৯৬৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগ করি। কখনও দেখিনি বাগমারায় কিংবা দেশের আর কোনো উপজেলায় পুরস্কারের প্রলোভন দিয়ে সদস্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তার মানে এখানে টাকার খেলা চলছে- সদস্য সংগ্রহ করার নামে লটারি খেলার পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে বাগমারায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’
এদিকে জেলা শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ সমকালকে বলেন, ‘সংসদ সদস্য এনামুল হক ভুল করে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। কেন্দ্রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ রকম হয়েছে। কেন্দ্র ঘোষণা দিয়েছিল, সর্বোচ্চ সদস্য সংগ্রহকারীকে পুরস্কৃত করা হবে। তিনি তা বুঝতে না পেরে সদস্যদের এভাবে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিষয়টি জানতে পেরে এ লটারির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বলেন। এর পর লটারির সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।’
সূত্র: সমকাল
Leave a Reply